জলবায়ু পরিবর্তনে ১০০ কোটি শিশু ‘মারাত্মক ঝুঁকিতে’

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কারণে প্রায় ১০০ কোটি শিশু ‘খুবই উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে। অধিকার সংস্থা কিডস রাইটস আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ নিয়ে সতর্ক করেছে। সংস্থাটি আরও বলছে, গত দশকে কম বয়সীদের জীবনমানের উন্নয়ন হয়নি। খবর এএফপির।

জাতিসংঘের সরবরাহ করা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ২০২২ সালের কিডস রাইটস সূচকে বলা হয়েছে, প্রায় ৮২ কোটি শিশু বর্তমানে তাপপ্রবাহের সংস্পর্শে এসেছে।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি সংস্থাটি বলছে, পানির ঘাটতি বিশ্বব্যাপী ৯২ কোটি শিশুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর মতো রোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০ কোটি শিশু অর্থাৎ প্রতি ৪ জনে ১ জন।

কিডস রাইটস ইনডেক্স হলো প্রথম ও একমাত্র সূচক, যা দেশগুলোতে বছরে শিশু অধিকারের প্রতি কতটা সম্মান জানানো হয়, তা প্রকাশ করে থাকে। শিশু অধিকার বাস্তবায়নে সূচকের ওপরের দিকে রয়েছে আইসল্যান্ড, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। ১৮৫টি দেশের মধ্যে তলানির দিকে রয়েছে সিয়েরা লিওন, আফগানিস্তান ও চাদ।

সূচকে শীর্ষ তিনে থাকা দেশগুলোর মধ্যে এবার আগের বছরের চেয়ে শুধু সুইডেনের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। চতুর্থ থেকে দেশটি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

কিডস রাইটসের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মার্ক ডুলার্ট এই বছরের প্রতিবেদনকে ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিশুদের জন্য উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, দ্রুত পরিবর্তন হওয়া জলবায়ু শিশুদের ভবিষ্যৎ ও তাদের মৌলিক অধিকারকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।

ডুলার্ট বলেন, গত দশকজুড়ে শিশুদের জীবনমানে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়নি। তার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তাদের জীবিকা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

কিডস রাইটস বলছে, শিশুদের ওপর করোনা মহামারির প্রভাব ছিল মারাত্মক। সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় তারা খাবার পায়নি কিংবা ক্লিনিক সেবা বিঘ্নিত বা বন্ধ থাকায় ওষুধ পায়নি। এটি ৫ বছরের কম বয়সী ২ লাখ ৮৬ হাজার শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

গত দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১৬ কোটিতে গিয়ে ঠেকেছে। গত ৪ বছরে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৮৪ লাখ বেড়েছে বলে কিডস রাইটসের সূচক বলছে। রটারডামের ইরাসমাস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মিলে তথ্য সমন্বয়ের কাজটি করেছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে অ্যাঙ্গোলা ও বাংলাদেশের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, শিশু অধিকারের বিষয়ে স্কোরে লক্ষণীয় অগ্রগতি করেছে দেশ দুটি।

অ্যাঙ্গোলায় পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ পাঁচ বছরের নিচে কম ওজনের শিশুর সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে কমিয়েছে।