যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ২ শতাংশ

উচ্চ মূল্যস্ফীতির হাত থেকে যেন রেহাই নেই যুক্তরাষ্ট্রের। জুন মাসে ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয় দেশটিতে—৯ দশমিক ১ শতাংশ। এরপর অবশ্য আগস্ট মাসে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে তা আরও কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ২ শতাংশ। তবে এখনো তা পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি।

গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে মুদি পণ্যের দাম ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ি ও চিকিৎসা খরচও বাড়তির দিকে। এক বছরে ডিমের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে মন্দাভাব। মন্দাভাবের কারণে আবার জ্বালানি তেলের চাহিদা কমেছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার কমতির দিকে।

এত কিছুর পরও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশ। অর্থাৎ ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতির হার আরও কমাতে নীতি সুদহার বাড়াতে থাকবে। তাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি পারে বলে আশঙ্কা। খবর বিবিসির

নীতি সুদহার বৃদ্ধির জেরে বিশ্বজুড়ে মন্দার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। বিশ্বের বড় সংস্থাগুলোও মন্দার আশঙ্কা করছে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) বিশ্বের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থনীতিবিদদের নিয়ে মতামত জরিপ করেছে। ৭৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মত দিয়েছেন, ২০২৩ সালে মন্দা হতে পারে। তাঁদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ মৃদু মন্দা এবং বাকি ৯ শতাংশ শক্তিশালী মন্দার আশঙ্কা করছে।

প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতিও বৈশ্বিক সংকটে রূপ নিচ্ছে। এ ছাড়া মজুরি হ্রাস, দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া অর্থনীতিবিদেরা।

এদিকে মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে আইএমএফের সদ্য প্রকাশিত ইকোনমিক আউটলুকে। বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যা চলতি বছর বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কিছুটা কমে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে আইএমএফ বলছে, গত দুই বছর মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছরে তা দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। তবে ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। সে ক্ষেত্রে গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হবে আগামী বছর। তবে ২০২৭ সালে মূল্যস্ফীতি কমে সাড়ে ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে আইএমএফ মনে করে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় সব দেশেই মূল্যস্ফীতির হার এখন বাড়তি। সব দেশই উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার পথ খুঁজছে। এদিকে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হারও ৯ শতাংশের ওপরে ছিল।