কণ্ঠনালি বা ভোকাল কর্ডের ক্ষতি একজন গায়কের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। এমনটা হতে পারে কণ্ঠস্বরের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে। শুধু তা–ই নয়, এতে কণ্ঠস্বরের অন্যান্য ক্ষতির ঝুঁকিও থাকে। তবে এ সমস্যা ঠেকাতে নতুন একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। পরা যায় এমন একটি তারহীন ব্লুটুথ যন্ত্র তৈরি করেছেন তাঁরা।
একজন মানুষ তাঁর কণ্ঠস্বর কতটুকু ব্যবহার করছেন; অর্থাৎ, কী পরিমাণ গান বা কথা বলছেন তা ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করবে এই যন্ত্র। ফলে কণ্ঠস্বরের অতিরিক্ত ব্যবহারে কণ্ঠনালির অবসাদ এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি তেরির আগেই যন্ত্রটি ব্যবহারকারীকে সতর্ক করবে।
এ ছাড়া এই যন্ত্রে থাকা মেশিন লার্নিং পদ্ধতি কথা বলা থেকে গানকে আলাদা করতে পারে। পাশাপাশি চারপাশের শব্দ থেকেও গান আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে। এমনকি গায়কের প্রতিটি আলাদা আলাদা কর্মকাণ্ডও অনুসরণে সক্ষম। আর কথা থেকে গানকে নির্ভুলভাবে পৃথক করার হার ৯৫ শতাংশেরও বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এই গবেষকেরা বলছেন, ব্যাটারিচালিত তারহীন যন্ত্রটি পেশাদার গায়ক, শিক্ষক, রাজনীতিক, কল সেন্টারের কর্মী, প্রশিক্ষক ও কণ্ঠের ওপর নির্ভর করে যোগাযোগ এবং জীবিকা নির্বাহ করেন—এমন যে কারও জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করতে পারে। এ ছাড়া এটি কণ্ঠস্বরসংশ্লিষ্ট ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় দূর থেকে ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে চিকিৎসককে সাহায্য করবে।
যন্ত্রটি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিয়েছেন জন এ রর্জার। তিনি বলেন, কথা ও গান কত উচ্চস্বরে এবং কতক্ষণ হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে পরিমাপ করতে পারে যন্ত্রটি।
যন্ত্রটির আকার অনেকটা ডাকটিকিটের মতো। এটি বুকের একটু ওপরে বসালে খুব সহজে কথা এবং গানের কম্পন প্রেরণ করতে পারে। এরপর ধারণ করা ওই কম্পন ব্লুটুথের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে থাকা অ্যাপে পাঠায়। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী নিজের কণ্ঠস্বরের সীমা নির্ধারণ করতে পারবেন। আর ব্যবহারকারী যখন ওই সীমার কাছাকাছি পৌঁছাবেন, তখন ডিভাইসটির সঙ্গে সংযুক্ত স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ বা ঘড়িতে এটি সতর্কবার্তা পাঠাবে।